স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশালে চাঁদা তুলে শারীরিক প্রতিবন্ধী বরের সঙ্গে শ্রবণ প্রতিবন্ধীর কনের বিয়ে দিলো স্থানীয়রা। জাঁকালো অনুষ্ঠান করে ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিজে থেকেই বিয়ে পড়ালেন। শুক্রবার (৫ মার্চ) বরিশাল নগরের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের পলাশপুরে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। আর রোববার (৭ মার্চ) স্থানীয়দের উদ্যোগে চাঁদা তুলে বৌ-ভাতের আয়োজন করা হয়। স্থানীয়রা বিয়ের আয়োজনে আনেন ঘোড়ার গাড়ি। তাতে বর-কনেকে চড়িয়ে ঘোড়ানো হয় বরিশাল নগরে। পরে ঘোড়ার গাড়িতে করেই নববধূকে পাঠানো হয় শ্বশুর বাড়িতে। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) নগরীর পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনি বাংলানিউজকে জানান, গত তিনদিন আগেই তাদের বিয়ে হয়েছে। রোববার (৭ মার্চ) স্থানীয়রা চাঁদা তুলে বৌ-ভাতের আয়োজন করে। আমিও সেখানে ছিলাম। এ আয়োজনে অনেক আনন্দ হয়েছে। বেশ ভালো লেগেছে। তবে বর চলাচলে অক্ষম হওয়ায় তাকে একটি হুইল চেয়ার উপহার দিয়েছি। তিনি জানান, ওই দম্পতির সুখের জন্য দোয়া রইল। ওরা আমাদের সমাজের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বরের নাম কালাম। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার গ্রামের বাড়ি বাকেরগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামে। তার মা ও বাবা নেই। কালামের আরেক ভাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আবদুস সালাম। তিনি দিন মজুরের কাজ করে যা আয় করেন, তা দিয়ে পলাশপুরের গুচ্ছগ্রামে ছোট একটি ঘরে ভাড়া থাকেন। আর কনে সুমাইয়া আক্তার সুমা শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী। তার বাবা বাবুল পালোয়ান রিকশাচালক। উভয় পরিবারই গুচ্ছগ্রামে থাকে। স্থানীয়দের তোলা ২৫ হাজার টাকায় বর-কনের পোশাকসহ অতিথি আপ্যায়ন করা হয়। আলামিন হোসেন নামে পলাশপুর এলাকার এক বাসিন্দা জানান, এ বিয়েতে এলাকার নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে শিশুরাও ব্যাপক আনন্দ করেছে। রোববার বিয়ে শেষে কনের বাড়ি থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে বর ও কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। বর কালাম বেপারী বলেন, ‘আমার তো তেমন কোনো আয় নেই। একলা চলি। ভাতার টাহা দিয়াই চলতাম। একটু চিন্তায় আছি। তয় ভালো লাগছে। ’
Leave a Reply